Header Ads

মানিয়ে নেয়া

মানিয়ে নেয়া
 


 কথায় আছে, বাস্তবতা যতই কঠিন হোক মানিয়ে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর। 

কিন্তু কতোটুকু মানিয়ে নিব? এই মানিয়ে নেয়ার কি কোন নির্দিষ্ট পরিমাপ আছে? 

একটা পরিবারে বাবামা, ভাইবোন,,স্বামী-স্ত্রী, শ্বশুরশাশুড়ি, ছেলেমেয়ে অনেকেই একসাথে বসবাস করে। একজন মানুষ কত জনের সাথে মানিয়ে চলবে? সবার সাথে কি মানিয়ে চলা সম্ভব? অথবা ধরুন একজন মানুষের সাথেই মানিয়ে চলল, সেটা কতদিন? মানিয়ে চলার দায়িত্ব কি শুধু একজনের?  পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্য যখন মানিয়ে চলে তখন সেটা সুন্দর হয়, সহনীয় হয়। কিন্তু একজন মানুষ দিনের পর দিন কষ্ট সহ্য করে মানিয়ে চলবে আর অপরজন স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠবে সেটা অমানবিক। 

যে মানুষ সব সময় পরিবারের শান্তি ও শৃঙ্খলার কথা ভেবে মানিয়ে নেয়, একটা সময় মানিয়ে নিতে নিতে তার নিজস্বতা বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। 

যে মানুষটি ভ্যানিলা আইসক্রিম খেতে পছন্দ করতো পরিবারের অন্য সবাই চকলেট আইসক্রিম খেতে পছন্দ করে বলে সে আর ভ্যানিলা আইসক্রিম খায় না। সে জানে পরিবারের সবার কাছে তার আবদারটা অতি তুচ্ছ আর বেমানান। এই তো গেল সামান্য আইসক্রিমের গল্প। কোথাও বেড়ানো, কারো সাথে কথা বলা, নিজের মতো করে চলা সেটা তো অকল্পনিয়। 

এভাবে মানিয়ে নিতে নিতে একটা সময় মানুষ তার শখ, পছন্দ, ভাললাগা সব ভুলে যায়। যে গাইতে পারত সে আর গায় না, যে নাচতে পারত সে আর নাচে না, যে লিখতে পারত সে আর লিখে না। কেউ হয়তো তাকে 'না' বলে না, তবে কেউ তাকে অনুপ্রেরণাও দেয় না, প্রশংসাও করে না। 

কেউ হয় তো তাকে অবহেলা করে না, তবে অনুপ্রাণিতও করে না। এভাবে রস-কসহীন চলতে চলতে মানুষটা কিছুটা রবোটিক হয়ে যায়। একটা সময় গুণসম্পন্ন মানুষটিও অকর্মার ঢেঁকি বনে যায়। মানুষটি ভাবে 'তাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না'। 

দৈনন্দিন জীবনের রুটিনমাফিক কিছু কাজের মধ্যেই তার জীবন আবৃত্ত হয়ে পরে। মানুষটি ভুলে যায় একটা সময় সে অনেক কিছু করতে পারতো। মানুষটি মনে করে ভবিষ্যতে সে আর কিছু করতে পারবে না। সে সুখি হয় তার ক্ষুদ্র-আবৃত্ত-পরাধীন জীবন যাপনে। 

No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.