Header Ads

মায়ের অবসর ( রিটার্ডমেন্ট) নেই

 ডাঃ সারা মুরমু মিতু 

 
মা



মায়ের অবসর ( রিটার্ডমেন্ট) নেই। মানুষের জীবন চক্রের (লাইফ সাইকেল) সকল স্তরেই মায়ের সরব উপস্থিতি, সেবার হাত প্রসারিত।মায়ের অবসর 

একজন বিবাহিতা নারী যখন তার গর্ভে ভ্রূণের অবস্থান টের পায়, তখন থেকেই অনাগত সন্তানের যত্ন; সাথে স্বামী সংসারের যাবতীয় কাজ। কর্মজীবী-শ্রমজীবী মায়েরা আগে মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করতো এক মাস, এখন হয়েছে ছয় মাস। ছয় মাস ছুটিতে কোন মা বসে থাকেনা।সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের যত্ন, বড় সন্তানদের দেখাশুনা, লেখাপড়ার তদারকি,স্বামীর অফিসের প্রস্তুতি, বাবা মার খোঁজ খবর, শ্বশুর- শ্বাশুড়ীর যত্ন- অসংখ্য কাজ, আর কাজ। ইদানীং নানা কারনে নব্বই ভাগ পরিবারে কোন হেল্পিং হ্যান্ড নেই, তাই রান্নার কাজও তার অলিখিত দায়িত্বের মধ্যে। সন্তান একটু বড় হলে তাকে হাটতে, কথা বলা, ফ্যামেলী নর্ম এবং ম্যানার্স শেখানো মায়ের অন্যতম কাজ। তিন বছর হলেই স্কুলে ভর্তি, আনা নেওয়া, এসাইনমেন্ট রেডী করা, যানবাহন, টিফিন। প্রাইমারী পার হলেই ভর্তিযুদ্ধের জন্য রেডী, টিউটরদের বাড়ী, কোচিং সেন্টার, মডেল টেস্ট।মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে আরো সম্প্রসারিত কাজ, যেভাবেই হোক সন্তানের প্লাস চাই। সন্তান অন্য শহরে ভর্তি হলে সার্বক্ষনিক টেলিকমিউনিকেসন। আর বিদেশে গেলে ভাইভার, মেসেঞ্জার, উইচেট, ইমো,হোয়াটস আপে লাইভ থাকা। গ্রামীন মায়ের যন্ত্রনা অনেক। ভোর চারটে থেকে রেগুলার ডিউটি, রোদ, বৃষ্টি, ঝড় তুফান তাকে বিরত রাখতে পারেনা। গ্রামীন মা মানেই আগ্রিকালচার সেকটরে ষাট ভাগ শ্রম, সময় অবধারিত। পুরো সংসার মা সামলায়। স্বামী সন্তান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়- সব কাজ পরিবারের পক্ষে করতে হয়। এ দেশের মায়ের দুর্গাদেবীর মতোই দশ হাত, তা না হলে এতো কাজ যুগপৎ ভাবে করা যেতোনা। যারা গার্মেন্টসে কাজ করে নির্দেশিত সময়ের আগে রওনা দিতে হয় হাতে লাঞ্চের টিফিন বক্স নিয়ে। বিউটিশিয়ানরা সকাল দশটা থেকে রাত দশটা, শুক্র-শনিবারের আরো বাড়তি কাজ। যারা দিনে পাঁচটা পরিবারে ডিউটি করে (বুয়া), তাদের গতি সুপারসনিক মিশাইলের মতো।বিদেশী হাউসে ডোমেস্টিক এইডদের ডাইভারসিফাইড রোল, হাউসে তারা অলরাঊন্ডার, - টু -জেড সব করতে হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অতিথী সেবা। বিবাহিত ছেলেমেয়েরা সন্তানের মা হলে মায়ের ডিউটি দ্বিগুন বেড়ে যায়। সন্তানদের আবদার, জন্মের আগেই থাকতে হবে,বড় হলে গল্প বলা, স্কুলে আনা নেওয়া-কাজ আর কাজ। জীবনের শেষাংকেও তার কোন অবসর নেই। স্বামীর কঠিন রোগ, পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলে তার ভূমিকা হাসপাতালের সিস্টারের মতো। সবার কাজ করতে করতে নিজের জন্য কোন সময় নেই। 

সন্তানরাই পারে মাকে ছুটি দিতে, অগণিত কাজ করে টায়ার্ড মাকে কিছুদিনের জন্য অবসরদান করতে। ছেলেমেয়েদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। 


আরও পড়তে ক্লিক করুন

মানবতা এখনো বেঁচে আছে 

মেয়েদের বড় হওয়া 

পোশাকেই পরিচয় 




No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.