চিঠি
চিঠি |
'রানার ছুটেছে তাই ঝুম ঝুম ঘণ্টা বাজছে রাতে।
রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে,
রানার রানার চলেছে,
রানার’-
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত গানের সেই রানার আজ আর নেই। ডাক বিভাগের আধুনিকায়ন করা হয়েছে বলে ডাক বিভাগের কর্মকর্তারা যদিও দাবী করে থাকেন, তবে কমেছে চিঠির সংখ্যা।
একটা সময় দূরের আত্মীয়স্বজনদের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি। শুভেচ্ছা বার্তা, খোঁজ-খবর নেওয়া, টাকা পাঠানো, চাকরির যোগদানপত্র সবই আদানপ্রদান করা হত চিঠির মাধ্যমে। আগের মতো আর বাড়িগুলোর গেটে দেখা মেলে না চিঠির বাক্সের, পোস্টমাস্টারের কিংবা পোস্ট অফিসের।
একটি চিঠির ভেতরে থাকতো দুই প্রান্তের দুটো মানুষের সুখ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনা, ভালবাসার নানা উপাখ্যান। শুধুমাত্র দূরের মানুষই নয়, ভালবাসার মানুষটিকে মুখে বলতে না পারা কথাগুলো মনের মাধুরী মিশিয়ে স্বযত্নে সাজিয়ে লেখা হত চিঠিতে। প্রেয়সীর কাছে সুগন্ধী মেখে চিঠি লিখত প্রেমিক, এমন কথা অনেকেই হয়ত শুনেছেন। তবে সেসব রুপ কথার কোনো গল্প নয়, একেবারেই সত্যি।
প্রযুক্তির এই আশীর্বাদিত যুগে সেই চিঠি লেখার অধ্যায় আমরা পেরিয়ে এসেছি অনেক আগে। চিঠির স্থলে জায়গা করে নিয়েছে মোবাইল ফোনের ক্ষুদে বার্তা। স্বল্প খরচে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনালাপের পর চিঠির মাহাত্য আজ অকেজো।
চিঠি |
আজ পহেলা সেপ্টেম্বর। আন্তর্জাতিক চিঠি দিবস। আধুনিকতার সংস্পর্শে এসে আমরা চিঠি লেখা ছেড়ে দিয়েছি। তবে অনেকের কাছে চিঠির আবেদন এখনো রোমাঞ্চকর। কবি মহাদেব সাহার মতো অনেক প্রেমিক-প্রেমিকাই তাদের ভালবাসার মানুষের কাছ থেকে এখনও চিঠি পাওয়ার ব্যাকুলতা হৃদয় দিয়ে অনুভব করেন।
মহাদেব সাহা তার কবিতায় প্রিয়তমার কাছে এভাবেই চিঠি চেয়েছেন.
"করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে তুলে দিও
আঙ্গুলের মিহিন সেলাইভুল বানানেও লিখো প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তাও,
এটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও, তোমার শাড়ির মতো
অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।’
No comments