Header Ads

বৌদ্ধ পূর্ণিমা

ভেসাক পোয়া 


বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সর্ব©বৃহৎ গুরুত্বপূর্ণ© ধমী© উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা শ্রীলংকার  ভাষায় যাকে বলা হয় Òভেসাক পোয়াÓ এই পূণি©মার দিনেই বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক শ্রীগৌতম বৌদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন, নির্বাণ লাভ করেন এবং দেহ ত্যাগ করেন। 

শ্রীলংকায় এই উৎসবকে তিন উৎসবের দিন বলা হয়। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পুরো শ্রীলংকা জুড়ে দুইদিন ব্যাপী চলে আধ্যাত্মিক বাহ্যিক আনন্দমিলন মেলা।  যার প্রস্তুতিপর্ব শুরু হয় ডিসেম্বর মাসের পূর্ণিমার দিন থেকে। শ্রীলংকার ভাষায় ডিসেম্বরের পূর্ণিমাকে বলা হয় Òউনদুয়াপ পোয়াÓ Òউনদুয়াপ পোয়াÓ বা ডিসেম্বরের পূর্ণিমার দিন থেকে রত্নাপুরায় অবস্থিত বৌদ্ধদের তীথ©স্থান Òশ্রী-পা'দে তীর্থস্থান সর্ব ©সাধারনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। Òশ্রী-পা’দেÓ অথ© গৌতম বুদ্ধের পায়ের চিহ্ন। এটি পাহাড়ের চুড়ায় অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে এই পাহাড়ের উচ্চতা দুই হাজার দুÕ ৪৩ মিটার। নিরামিষ আহার করে শুভ্র পোশাক পরে খালি পায়ে মাইল পথ পায়ে হেঁটে পাহাড়ের একেবারে চূuড়ায় শ্রী-পা’দে যেতে হয়। সেখানে ভক্তরা ভক্তিভরে তাদের মনের যত কামনা-বাসনা, চাওয়া, প্রাথ©না গৌতম বুদ্ধের নিটক তুলে ধরেন। ভেসাক পোয়া বা বৌদ্ধ পূণি©মার পরের দিন থেকে শ্রী-পা’দে বন্ধ করে দেওয়া হয়।


রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে বিতরণ করা হচ্ছে চা 


ভেসাক পোয়াÕ এই উৎসবে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা পুরো পরিবার নিয়ে বৌদ্ধ  মন্দিরে যায়। সাদা পোশাক, পদ্মফুল, বাতি আর ধুপকাঠি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করে। সারাদিন মন্দিরে চলে বৌদ্ধ ভিক্ষুর উপদেশ বানী এসময় ভক্তরা নিজ নিজ পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, একে অপরের সঙ্গে পুনর্মিলিত হন এবং পুরোনো জীবনের ভুল ভ্রান্তি ভুলে নতুন জীবন শুরুর প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করেন। ভক্তরা সবাই একই সঙ্গে মন্দিরে আহার গ্রহণ করেন।

ভেসাক উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গ্রাম, পাড়া, মহল্লায় চলে তোরণ, আলোকসজ্জা, এবং ভক্তিগীতির প্রতিযোগিতা। তোরণগুলোতে গৌতম বুদ্ধের জীবনীর উপর ভিক্তি করে ভিডিও প্রদশ©নী চলতে থাকে। প্রত্যেক বাড়িতেই জ্বলে উঠে রং-বেরঙের বাতি।

এই উৎসব গ্রামের চেয়ে শহরে আরো বেশী চমকপ্রদ এবং আকষ©ণীয় হয়ে থাকে। বাহারি আলোকসজ্জা ও সৌন্দর্যকে উপভোগ করার জন্য গ্রামের মানুষজন এসময় শহরে চলে আসে। তখন দেশের শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোই নয়, সরকারী- বেসরকারী অফিস, আদালত সব কিছু পুরো এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। দোকান পাট, কাuচা-বাজার, মাছ মাংস, শাক-সবজী খাবার কোন কিছুই কিনতে পাওয়া যায় না। তাই ভেসাক পোয়া দেখতে আসা গ্রামের মানুষদের খাবারের যোগান দিয়ে থাকেন শহরের মানুষেরা। অর্থাৎ ভেসাক পোয়া এবং এর পরেরদিন এই দুইদিন রাস্তাঘাট, মন্দির, তোরণ, আলোকসজ্জা সেখানেই যাবেন সেখানেই খাবার বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করা হবে। বিভিন্ন সংগঠন কিংবা ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে খাবার পরিবেশন করে থাকে। রাস্তায় গাড়ী থামিয়ে ডেকে ডেকে খাবার পরিবেশন করা হয়। যার অথ© ধনী-গরীব সবার সাথে খাবার সহভাগিতা করা। এখানে একটা কথা বলে রাখা ভাল যে, এই খাবার সহভাগিতা কেবল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা করেন না, খ্রিষ্টান, হিন্দু, মুসলিম ভাইবোনেরাও এই উৎসবে সামিল হয়। এসব খাবারের মধ্যে থাকে ভাত-তরকারী তবে অবশ্যই নিরামিষ, নুডুলস, ছোলা, সরবত, চা, কফি, বিস্কুট, আইসক্রিম এবং বিভিন্ন মিষ্টি।

গত তিন বছর করোনা মহামারীর কারনে শ্রীলঙ্কার ভেসাক পোয়াÕ আনন্দময় উৎসবে ভাটা পড়েছিল। এ বছরও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে মানুষের মধ্যে বাহ্যিক উৎসবের সেই প্রভাবটা নেই। তবে মানুষের মধ্যে রয়েছে একতা, ধৈর্য ও সহনশীলতা। নাই বা হলো বৌদ্ধদের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূণ© ধমী© উৎসবে বাহ্যিক জাঁকজমক আর বর্ণীল আলোর ছড়াছড়ি। যদি আধ্যাত্মিকতা হৃদয়ে থাকে তবে বাহ্যিকতা সেখানে গৌণ্য। দেশের পুরানো জৌলুস আর সচ্ছলতা ফিরে আসুক এবারের ভেসাক পোয়াতে এটাই কাম্য। একদিন আবার সব আগের মতো হয়ে যাবে, আমরা সব উৎসব পালন করবো আবার আগের মতো করেই  এই আমাদের প্রাথ©না হোক এবারের বৌদ্ধ পূণি©মায় 


আরও পড়তে ক্লিক করুন 

পোশাকেই পরিচয় 

কোথায় যাও 

বৌভাতের রাত 

  

No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.