কোথায় যাও?
অযাচিত প্রশ্ন |
বাংলাভাষা ছাড়া আর অন্য কোন
ভাষায় ‘কোথায় যাও’ এই বাক্যটির এত বেশি ব্যবহার বোধ করি হয় না। কারণ একজন মানুষ কোথায়
যায় বা যাবে সেটা তার একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। শুধুমাত্র মা-বাবা, ভাইবোন, স্বামী-স্ত্রী,
ছেলেমেয়ে অর্থাৎ পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কারো জানবার অধিকার নেই একজন ব্যাক্তি কোথায়
যাচ্ছেন এবং যিনি যাচ্ছেন তিনি কোথায় যাচ্ছেন সেটা অন্যজনকে জানাতেও বাধ্য নন।
আর একটু খোলসা করে বলি, ধরুন
আপনি রেডি হয়ে রাস্তায় বেড় হয়েছেন কোথাও যাবেন। যার সাথেই দেখা হচ্ছে তিনিই আপনাকে
প্রশ্ন করছেন, কোথায় যাও?
আপনি কোথায় যাচ্ছেন সেটা বলতে
চাইছেন না। তাই দায় এড়াতে আপনি হয়তো বললেন, বাজারে যাই।
কি কিনতে যাও?
সবজি কিনতে যাই।
বাড়িতে কত সবজিওয়ালারা আসে।
তাদের কাছে ভাল সবজি পাওয়া যায়। বাজারে যাও কেন?
এধরনের হাজারো প্রশ্নের সম্মুখীন
আপনাকে হতে হবে এবং না চাইতেই বেশ কিছু পরামর্শও পেয়ে যাবেন।
এই যে আপনি কোথায় যাচ্ছেন সেটা
জানা কি পাড়া –প্রতিবেশীদের খুব দরকার? বা আপনি কি আশেপাশের মানুষদের জানাতে বাধ্য?
মোটেও না। যারা এ ধরনের প্রশ্ন
করেন তারা এক কথায় অভদ্র। পৃথিবীর যে কোন দেশে পরিচিতি কেউ কাউকে রাস্তায় দেখলে সুপ্রভাত
কিংবা শুভসন্ধ্যা বলেই দায়িত্ব শেষ করবে। খুব বেশি হলে জিজ্ঞেস করবে, কেমন আছেন? এই
পর্যন্তই।
কিন্তু আমাদের বাঙ্গালীদের
দায়িত্ববোধ এত বেশিই যে, পাশের বাড়ির কে কোথায় গেল? কেন গেল? একা গেল নাকি সাথে কে
গেল? নানান কৌতূহল আমাদের। অন্যের ব্যপারে আমাদের নাক না গলালে যেন চলেই না।
একজন মানুষ কোথায় যাচ্ছেন তিনি
নিজে না বললে কারো জানবার অধিকার নেই। কেউ যদি জানতে চান সেটা অনধিকার চর্চা, অভদ্রতা।
আমরা দিনদিন আধুনিক হচ্ছি,
সভ্য হচ্ছি কিন্তু আমাদের মানসিকতা এখনও নিচু স্তরে রয়ে গেছে। তাই আসুন, ‘কোথায় যাও’
প্রশ্নটি করে অন্যকে বিব্রত করা থেকে আমরা দূরে থাকি। অন্যের ব্যাপারে অযাচিত অগ্রহ
না দেখাই। আমরা নিজের কাজে সময় ব্যয় করি।
আরও পড়তে ক্লিক করুন
No comments