মাতৃভাষা রচনা- একটি বাস্তব শিক্ষা
মাতৃভাষা |
মাতৃভাষা নিয়ে আমাদের গর্বের
শেষ নেই। গর্ব হবেই বা না কেন? এই বাংলাভাষাকে মাতৃভাষা করতে বাঙ্গালীদের বুকের রক্ত
দিতে হয়েছে, জীবন দিতে হয়েছে। বাংলাভাষায় কথা বলতে পেরে আমি সত্যি গর্বিত। বাংলাকে
রাষ্ট্র ভাষার দাবীতে যারা প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন আজকের এই দিনে তাদের প্রতি রইল বিনম্র
শ্রদ্ধা।
এবার মাতৃভাষা রচনা লিখা নিয়ে
আমার জীবনের বাস্তব একটি শিক্ষার অভিজ্ঞতা শেয়ার করব-
গত নভেম্বরে আমার মেয়ে মৈত্রী
স্কুল থেকে ফিরলে ওকে জিজ্ঞাসা করলাম, আজ টিচার
কি রচনা লিখতে দিয়েছিলেন?
মৈত্রীঃ মা আজ মাওবাসা রচনা
লিখেছি।
আমিঃ তাই? কি লিখেছিস? তোকে
তো আমি বাংলাভাষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো কাহিনী বলেছি। ঠিক সেভাবে লিখেছিস তো?
মৈত্রীঃ কি বল মা? আমি বাংলাভাষা
সম্পর্কে লিখব কেন?
আমিঃ তো, তোর মাতৃভাষা বাংলা
না? তুই বাংলাভাষা সম্পর্কে লিখবি না তো কি লিখবি?
মৈত্রীঃ মা আমি সিনহালা ভাষা
সম্পর্কে লিখেছি।
আমিঃ সিনহালা ভাষা তো তোর বাবার
ভাষা আর তোকে লিখতে বলা হয়েছে মায়ের ভাষা সম্পর্কে।
মৈত্রীঃ মা আমি যদি বাংলাভাষা
সম্পর্কে লিখি টিচার কিভাবে আমার খাতা যাচাই করবেন? টিচার তো আর বাংলাভাষার ইতিহাস
জানেন না।
এই ব্যাপারে সত্যি আমার একটু
ইগোতে লাগল। অনেকটা রাগ করে আমি বললাম, তাই বলে তুই মিথ্যা কথা লিখে আসবি?
আমার মেয়ে হাসতে হাসতে বলল,
মা রচনায় সবাই মিথ্যে কথাই লিখে। আমি লিখলে দোষ হল?
আমিঃ মিথ্যে কথা লিখে মানে?
মৈত্রীঃ মা তুমি সেদিন আমাকে
বলেছিলে তুই এস এস সি পরীক্ষার সময় ট্রেনজার্নি, প্লেনজার্নি রচনা পড়েছিলে।
আমিঃ হ্যাঁ তো?
মৈত্রীঃ তুমি কি এস এস সি পরীক্ষার
আগে কখনো প্লেনে বা ট্রেনে চড়েছিলে?
আমিঃ না, তো?
মৈত্রীঃ তুমি যদি প্লেনে বা
ট্রেনে না চড়ে সেসব ভ্রমণ সম্পর্কে মিথ্যে কথা লিখতে পার তবে আমি আমার মাতৃভাষা সম্পর্কে
মিথ্যে লিখলে দোষ কোথায়?
আমার মেয়ের কথায় আমি সত্যি
অবাক যেমন হয়েছি, একই সাথে লজ্জা পেয়েছি এই ভেবে যে, বাংলা পরীক্ষায় আমরা মিথ্যা কথা
লিখে আসি এবং অনেক নম্বর নিয়ে পাসও করি।
আরও পড়তে ক্লিক করুন
খুবই সত্যি, এবং সাবলীল লেখনী।
ReplyDelete