Header Ads

উদুয়াপ পয়া (পূর্ণিমা)

 

সামানালা পাহাড়

আজ শ্রীলঙ্কায় পালিত হচ্ছে উদুয়াপ পয়া যার অর্থ বছরের শেষ পূর্ণিমা। বছরের এই শেষ পূর্ণিমাটির বিশেষত্ব হচ্ছে এই পূর্ণিমাতেই ভারতের সম্রাট ধর্ম অশোকের মেয়ে সাঙ্গামিত্তা থের প্রথমবার শ্রীলঙ্কায় আগমন করেন। লর্ড গৌতম বুদ্ধা যে বট গাছের নিচে বসে প্রজ্ঞা লাভ করেছিলেন সেই বট গাছে একটা শাখা সাঙ্গামিত্তা থের শ্রীলঙ্কায় নিয়ে আসেন। পরে সেই শাখাটি অনুরাধাপুরার মাহা মেউনা পার্কে রোপণ করা হয়। যেটি এখনও শ্রীলঙ্কানদের প্রসিদ্ধ ও পরম-পূজনীয় স্থান। সাঙ্গামিত্তা থের শ্রীলঙ্কায় আসার পর থেকে শ্রীলঙ্কায় মেয়েদের বৌদ্ধ-সন্ন্যাসী ব্রত গ্রহণের প্রচলন শুরু হয়।   

আজকের এই উদুয়াপ পূর্ণিমার দিন থেকে শ্রীপাদে বৌদ্ধমন্দিরে বিশেষ তীর্থ শুরু হচ্ছে। এই তীর্থ চলবে মে মাসের পূর্ণিমার দিন পর্যন্ত। শ্রীপাদে হচ্ছে রাত্নাপুরা জেলায় অবস্থিত সামানালা পাহাড়ের উপর নির্মিত বৌদ্ধদের আরও একটি বিশেষ মন্দির। এখানে লর্ড গৌতম বুদ্ধার পায়ের ছাপ রয়েছে বলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে। কথিত আছে, লর্ড গৌতম বুদ্ধা শ্রীলঙ্কার সামান দেবীর আমন্ত্রণে তৃতীয়বার যখন আগমন করেন তখন সামান দেবী লর্ড বুদ্ধাকে অনুরধ করেন কোন একটি চিহ্ন রেখে যাওয়ার। তখন লর্ড বুদ্ধা কালো পাথরের উপর নিজের পায়ের ছাপ রেখে যান। লর্ড বুদ্ধার পায়ের ছাপ যে মন্দিরে সংরক্ষণ করে রাখা আছে সে মন্দিরকেই বলা হয় শ্রীপাদে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই পাহাড়ের  উচ্চতা ২২৩৭ মিটার।    


লর্ড বুদ্ধার পায়ের চিহ্ন 


ডিসেম্বরের পূর্ণিমা থেকে মে মাসের পূর্ণিমা পর্যন্ত এই পাঁচমাস চলবে তীর্থ। এই তীর্থে যাবার আগে থেকেই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মানসিক ও আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি নিতে হয়। এসময় তারা মাংসাহার ত্যাগ করেন এবং পুরোপুরি নিরামিষ ভোজন করেন। সাদা পোশাকে এবং খালি পায়ে উঠতে হয় পাহাড়ের উপর। পথিমধ্যে শিতাগাঙ্গুয়া ঝরনার পানিতে স্নান করে পরিশুদ্ধ হয়ে দর্শন করতে হয় শ্রীপাদে।  


শ্রীপাদে 


তীর্থ যাত্রীরা সাধারণত রাতের বেলা পাহাড়ে উঠতে শুরু করেন। পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে পৌঁছান ভোরে যাতে পাহাড়ে উঠেই তারা সূর্যোদয় দেখতে পারেন। তীর্থ যাত্রীরা বিশ্বাস করেন ভোরে সূর্যদেবী স্বয়ং শ্রীপাদে মন্দিরে প্রনাম জানান। সূর্য উঠতে শুরু করলেই তীর্থযাত্রীরা উলুধ্বনি দিতে থাকেন।

তাই আজকের এই পূর্ণিমাটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিশেষ এক পূর্ণিমা । 


আরও পড়তে   যেখানে সহজেই মিলে মানিক-রতন

No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.