ভাতের বিকল্প খাবার
শিমুল আলু |
বাঙ্গালীকে বলা হয় ভেতো বাঙ্গালী। মানে সারাদিনে যাই খাইনা কেন ভাত না হলে চলবেই না। আমরা দুপুর এবং রাতে দুই বেলা ভাত খাই। অনেকে আবার তিন বেলাই ভাত খেয়ে থাকেন। কেউ কেউ ভাতের বদলে একবেলা রুটি খায় তবে সেটা রাতে।
কিন্তু
শ্রীলঙ্কানদের তিন বেলা ভাত না হলেও চলে। তবে ভাতের বদলে রুটি খাওয়ার চল নেই এখানে।
বরং শ্রীলঙ্কানরা ভাতের বদলে কচ অর্থাৎ কাঁঠাল এবং ম্যানক্কা যাকে আমরা বলি শিমুল আলু
খেয়ে থাকে। এই দুইটি খাবারই শ্রীলঙ্কানদের জনপ্রিয় প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী খাবার।
কাঁঠাল
পাকধরার আগে সেটাকে কেটে রোয়া থেকে বিচি বের করে আলাদা করা হয়। এরপর রোয়াগুলো ধুয়ে
পানি ঝরিয়ে খুব ঝুরি ঝুরি করে কেটে অল্প পানি দিয়ে চুলায় বসিয়ে পাতলটি ভাল করে ঢেকে
দেওয়া হয়। একটু সিদ্ধ হয়ে এলে এতে সামান্য লবণ এবং নারিকেল কোড়া দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে
চুলা বন্ধ করে ঢেকে রাখলেই হয়ে যাবে কচ। এই খাবারটি ভাতের বিকল্প হিসেবে খাওয়া হয়।
শিমুল
আলু দেখতে অনেকটা গাছের শেকড়ের মত তবে খুব মোটা ধরনের। এই আলুর ছাল ফেলে দিয়ে ভেতরের
সরু শিকড়টি আলাদা করে টুকরো টুকরো করে কেটে বেশি করে পানি ও লবণ দিয়ে সেদ্ধ করা হয়।
আলু সেদ্ধ হয়ে গেলে পানি ছেঁকে ফেলে দিতে হয়। এরপর নারিকেলের দুধের সাথে সামান্য হলুদ,
লবণ, কারিপাতা, লেবুর রস ভাল করে মিশিয়ে সেদ্ধ আলুতে ঢেলে দিতে হয়। সব একসাথে মিশিয়ে
নিলে আলুগুলো আস্তে আস্তে নারিকেলের দুধ শুষে নিয়ে ঝরঝরে হয়ে যায়। এই আলু খাওয়া হয়
নারিকেলের ভর্তা দিয়ে।
নারিকেল
কোরানোর মধ্যে পেঁয়াজ, মরিচ, কারিপাতা, লবন, লেবুর রস দিয়ে মাখিয়ে নিলেই হয়ে যাবে দারুণ মজাদার নারিকেলের ভর্তা।
শ্রীলঙ্কার
প্রতিটি বাড়িতেই কাঁঠাল, নারিকেল ও শিমুল আলুর গাছ রয়েছে। প্রত্যেকটি পরিবারেই দিনের
একবেলা ভাতের বদলে এসব খাবার খেয়ে থাকে।
কাঁঠাল
এবং শিমুল আলু খুবই স্বাস্থ্যসম্মত শর্করা জাতীয় খবার। এতে ভাতের সমপরিমান পুষ্টি রয়েছে। চিকিৎসকরা বাড়ন্ত শিশুদের এসব খাবার দেবার
পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কচ এবং ম্যানক্কা শিশুরা স্কুলের টিফিনেও খেয়ে থাকে।
No comments