Header Ads

আমি যে খেলায় মেডেল পেলাম সেই খেলার নামটা জানি কি?

 

ফুটবল 


চলছে বিশ্বকাপ ফুটবল। প্রতি চার বছর পর পর ফিরে আসে এই ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। ফুটবল প্রেমিরা এই আসরকে ঘিরে সারা মাসজুরে বিভিন্ন পরিকল্পনা করেন। বিশ্বকাপের এই সময়টিতে বাংলাদেশে এমন কোন বাড়ি খুঁজে পাওয়া যাবে না যে বাড়িতে ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনার সমর্থকরা পতাকা উড়াননি। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ছাড়াও ফ্রান্স, জার্মানি, ইংল্যান্ডসহ আরও অনেক দেশের পতাকা থাকে। তবে ফুটবলের নাম আসলেই যে নাম দুটো সবার আগে চলে আসে তা হচ্ছে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল। এই দুই  দলের সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা যেন নিত্যনৈমেতিক ঘটনা। কোন কোন ক্ষেত্রে এই বাকবিতণ্ডা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গিয়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। বাংলাদেশের খুব কম মানুষই আছে যাদের বিশ্বকাপ নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। ছেলে-বুড়ো, নারী-পুরুষ সবার মাঝেই এই সময়টাতে ফুটবল নিয়ে আলাদা একটা রোমাঞ্চ কাজ করে।

ঘরে-বাইরে, রাস্তাঘাট, বাজার, শপিংমল সব জায়গাতেই মানুষ নিজের দলের জার্সি পরে ঘুরে বেড়ায়। জার্সি দেখলেই জানা যায় কে কোন দলের সমর্থক। নিজের বাড়িতে একা একা না খেলা দেখে রাত জেগে বন্ধুদের নিয়ে একসাথে খেলা দেখা, খিচুরি পার্টির আয়োজন করা, খেলা নিয়ে বাজি ধরা সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ চলাকালীন মাসটি উৎসবের মাসে পরিনত হয়।

তবে শুনে অবাক হবেন যে, এই যে ফুটবল নিয়ে বিশ্বে এতো কাণ্ড ঘটে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কাতে এর বিন্দুমাত্র রেশ নেই। শ্রীলঙ্কানরা জানেনই না যে কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল নামে একটা আসর বসেছে। টিভির কোন চ্যানেলে তো খেলা দেখানো হয়ই না এমনকি সারাদিনের প্রধান খবরেও বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে কোন খবর নেই। আমার জন্য বিষয়টি বড়ই বিস্ময়ের।

মজার একটা ঘটনা বলি, আমি তখন ফিলিপাইনে রেডিও ভেরিতাসে কর্মরত। ভেরিতাসে নতুন পরিচালক যোগ দিলেন। তিনি ভেরিতাসে যোগ দেয়ার আগে আট বছর ব্রাজিলে কাজ করেছেন। তাই ফুটবল খেলা নিয়ে পরিচালকের আগ্রহ এবং উৎসাহ অসীম। আমাদের বাৎসরিক ক্রীড়া উৎসবে তিনি সেবার ফুটবল যোগ করলেন। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিয়েনমার, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও চীনের সহকর্মীরা সবাই খুশি। তবে খেলা হল ছোট আকারে। ছোট মাঠ এবং ছোট গোলপোস্ট। ভেরিতাসের সব কর্মীদের নাম লিখে লটারির মাধ্যমে মোট চারটি দল করা হল।  

যাই হোক, কোন একদলে আমার স্বামী শান্তাকে খেলতে হয়েছে। ও ফুটবল খেলা সম্পর্কে কিছুই জানে না। আমি যতটুকু জানি ওকে বলে দিলাম। আমার কথামতো ও বলকে বিপক্ষ দলের গোলপোস্টের দিকে পাঠাতে চেষ্টা করল। সমস্যা হল দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হলে। আমি ওকে বলতে ভুলে গেলাম যে দুই দলকেই জায়গা পরিবর্তন করতে হবে এবং গোলপোস্ট এবার অন্যদিকে।  

শান্তা বল পেয়েই ওর নিজের গোলপোস্টের দিকেই বারবার নিয়ে যাচ্ছিল। ঈশ্বর সহায় কোন দলই গোল করতে পারেনি। শেষে খেলা টাই-ব্রেকারে গড়াল। শান্তাও একটা গোল দিয়ে ফেললো,  শান্তার দল বিজয়ী হল এবং ও একটা মেডেলও পেয়ে গেল।  

রাতে খাবার টেবিলে ও আমাকে জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা আমি যে খেলায় মেডেল পেলাম সেই খেলার নামটা জানি কি???


আরও পড়ুন    শ্রীলঙ্কার খাবার-দাবার

                        যেভাবে আমি রুটি বানাতে এক্সপার্ট হলাম 

No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.