Header Ads

সিগিরিয়া

 

সিগিরিয়া




গতকাল ছিল বিশ্ব পাহাড় দিবস। ভাবলাম আমার পাহাড় দেখার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে সহভাগিতা করি। বাংলাদেশে পাহাড়ে উঠার সুযোগ না হলেও শ্রীলঙ্কায় আমি বেশ কয়েকবার বেশ কয়েকটি পাহাড়ে উঠেছি।

আজ জানাবো শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে ছোট এবং প্রসিদ্ধ এক পাহাড় ভ্রমন করার অভিজ্ঞতা। শ্রীলঙ্কার আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে সিগিরিয়া হচ্ছে অন্যতম। সিগিরিয়া আসলে পাহাড়ের উপর নির্মিত একটি রাজপ্রাসাদ। যে রাজপ্রাসাদে পুকুর, বাগান, ঝরনা, সবই রয়েছে। আরও রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত পাথরের নান্দনিক চিত্রকর্ম। ধারণা করা হয়, সিগিরিয়া হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ল্যান্ডস্কেপিং এলাকা। ১৯৮২ সালে ইউনেস্কো সিরিগিয়াকে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য হিসেবে ঘোষণা করে।


ধারনা করা হয় সিগিরিয়া ঠিক এমন ছিল


কি কারণে সিগিরিয়াকে অষ্টম আশ্চর্য খেতাব দেয়া হল? কেনইবা সিগিরিয়া বিখ্যাত? 

শ্রীলঙ্কার মাতালে জেলার দাম্বুল্লা শহরে সিগিরিয়া অবস্থিত। রাজা ধাতুসেনার পুত্র রাজা কাশ্যাপা তার রাজত্বকাল ৪৭৭ সাল থেকে ৪৯৫ সালের মধ্যে পুরো একটা পাহাড়ের চূড়ায় এই প্রাসাদ নির্মাণ করেন। প্রাসাদটি ছিল একটি বিশাল সিংহের অবয়ব। প্রাসাদের প্রবেশ পথে রয়েছে সিংহের মুখ। ঠিক সিংহের মুখের ভেতর দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে প্রাসাদে প্রবেশ করতে হয়। বর্তমানে শুধুমাত্র সিংহের পা দুটি অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। আর পাহাড়ের চুড়ায় রয়েছে প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ।



সিংহের পা 

সিগিরিয়ার উচ্চতা দুইশ মিটার। সিগিরিয়ার চুড়ায় উঠতে ১২শ'টি সিঁড়ি পার হতে হয়। এত উপরে সেই প্রাচীনকালে কিভাবে পুকুর, লেক, আধুনিক পানির ফোয়ারা নির্মাণ এবং বাগানে ও পুরো প্রাসাদে পানি সরবরাহের আধুনিক সব ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেইটাই এক বিস্ময়।

গত ১০ই মে আমার সিগিরিয়া যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। দাদা-বউদি শ্রীলঙ্কা বেড়তে এলে আমার শ্বশুর বাড়ির সবাই মিলে দুইদিনের সফরে বের হয়েছিলাম। সিগিরিয়ার পাশে আরও একটি প্রসিদ্ধ শহর অনুরাধাপুরা ঘুরে সিগিরিয়া যেতে বিকেল ৪ টা বেজে গিয়েছিল। 

গাড়ি পার্ক করার যায়গা থেকে প্রায় দের কিলোমিটার গভীর বনের ভেতর দিয়ে হেঁটে সিগিরিয়ার টিকিট কাউন্টারে পৌঁছালাম। শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের জন্য প্রবেশ ফি শ্রীলঙ্কান ১০০ রুপি আর বিদেশিদের গুনতে হবে ৩০ ডলার।   


পাথরের চিত্রকর্ম


টিকিট কাউন্টার থেকে সিগিরিয়া পাহাড়ের ঠিক নিচে যেতে আরও আধা কিলোমিটার হাঁটতে হয়। এবার সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠার পালা। পাথরের সিঁড়িগুলো যথেষ্ট খাড়া এবং মসৃণ যে ভয় হয় এই বুঝি পড়ে যাই। আমরা অর্ধেকটা উঠতেই আকাশ ঘন অন্ধকার করে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়তে শুরু করল। আমরা যে পর্যন্ত উঠেছিলাম সেই পর্যন্ত পাথরের সিঁড়ি ছিল।

সেখান থেকেই সিংহের মুখের ভেতর দিয়ে প্রধান প্রাসাদের প্রবেশ পথ। এরপর উঠতে হয় লোহার সিঁড়ি বেয়ে। পাহাড়ের বাইরের দিক দিয়ে বাঁকানো সিঁড়িগুলো দেখেই শিহরিত হয়েছিলাম। আর ঠিক তখন বৃষ্টি শুরু হলে পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে নামবো কিভাবে সেই ভয়ে আর উঠা হয় নি। নিচে নেমে এসেছিলাম কাক ভেজা হয়ে।    


সিগিরিয়ার নৈসর্গিক সৌন্দর্য 

অপূর্ব এক পরিবেশ সিগিরিয়া এলাকায়। চারিদিকে সবুজের হাতছানি। অর্ধেক পাহাড়ের উপর থেকেই উপভোগ করেছি সিগিরিয়ার নৈসর্গিক সৌন্দর্য। সেইবার বৃষ্টির জন্য সিগিরিয়ার চুড়ায় উঠতে পারিনি তবে আশা আছে আবার কোন একদিন ঠিক পৌঁছে যাব সিগিরিয়ার চূড়ায়।  


আরও পড়ুন 

No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.