আজিকার খোকা
শিশু |
গুণী মায়ের
গুণের কথা বলব কি যে আর,
ছেলের মা হয়ে
যে তার, সে কি অহংকার।
সোনার চামচ
মুখে নিয়ে জন্মেছে খোকা মায়ের ঘরে,
চাঁদ চাইলেও
এনে দিবে প্রিয় খোকার তরে।
ঘরে খাবে খোকা
বড় মাছ আর মাংস ভুনা হলে,
ডাল রাঁধিলে
বন্ধুদের নিয়ে রেস্টুরেন্টে চলে ।
দশ বছর হলে
স্মার্টফোন লাগে পনের বছরে বাইক,
রাত হলে খোকা
উৎসবে মাতে জোরে বাজিয়ে মাইক।
খোকা তার আরামে
ঘুমাবে বানায় যে কোল বালিশ,
কানে তালা দেয়
পাড়ার লোকে যতই করুক নালিশ।
নেশা করে খোকা
ঘরে ফিরিলে মা তার শাসন করবে কোথা?
খোকার মাথা
গরম আছে আজ, জ্বালাস না কেউ অযথা।
নেশার টাকা
না পেলে খোকা সব করে ভাংচুর,
মদের সাথে রেঁধে
দেয় মা চাট আর চানাচুর।
কাজকর্মে নেই
তো খোকা লেখাপড়ার নেই বালাই
শাসন খোকারে
যদি করে কেউ, মা দেয় তারে ধোলাই।
বাপের টাকা
ছেলে উড়াবে সমস্যা আছে কারো?
বিদেশ গেলে
অমন টাকা কত আসবে আরো।
দালাল ধরে ঋণধার
করে বিদেশ গেলে খোকা,
গিয়ে দেখে চাকরি
এ-কি! দালাল দিয়েছে ধোঁকা।
বড়পোস্টে চাকরি
সবাই করবে স্যার স্যার,
এসে দেখে সুইপারিতে
পরিস্কারের কারবার।
মাকে ফোনে বলে
এখানে থাকলে মরে যাব ধুঁকে ধুঁকে,
মা বলে খোকা
লাগবে না কাজ, ফিরে আয় আমার বুকে।
দাদা-নানাদের
জমি থেকে সে পেয়েছিল বিঘা তিন,
সব বেচে দিয়ে
শোধ করেছে পাওনাদারের ঋণ।
মা ভাবিল খোকা
আর কত থাকবে যাযাবর,
রাতে থেকে থেকে
মাজার হাড়গুলো করছে নড়বড়।
ঘটক আসিল কথা
যে তাহার বড়ই চটকদার,
মেয়ে আছে গো
গুণবতী আর দেখতে চমৎকার।
মেয়ে শুধিল,
ছেলের স্বভাব কেমন? করে কি কোন নেশা?
পাত্র যে গো
সমাজ সেবক, ব্যস্ত যে হামেশা।
ক’দিন যেতেই
বউ বুঝে যায় ঘোটক পুরাই ভুয়া,
স্বামী তাহার
কাজ করে না খেলায় শুধু জুয়া।
জুয়ার নেশায়
সব হারিয়ে বাজি রেখেছে বউ,
এমন স্বামীর
সাথে নাকি সংসার করে কেউ।
মামলা দায়ের
করে বউ বাপের বাড়ি গেলে,
পুলিশ নিয়ে
গিয়ে তারে মারছে তালে তালে।
পুলিশের মার
খেয়ে খোকা ধরেছে এবার কান,
যে যাই বলুক
জীবনে সে সিগারেটে দেব না টান।
দাগী আসামী
হয়ে আমি ফাঁসিলাম কেসে কেসে,
মা আমারে নষ্ট
করেছে বুঝলাম অবশেষে।
এত বড় কথা!
অমানুষ তুই, এই ধরেছি পেটে,
তোর পেছনে সারাটা
জীবন মরলাম আমি খেটে।
যা চেয়েছিস
সব দিয়েছি, রেখেছি মাথায় করে,
সেই ছেলে বলে
মা-ই খারাপ, ভাত দেয় না মোরে?
বখে গেছি আমি
যখন দেখেছ শাসন করনি মোরে,
সঠিক শাসন পেলে
গো মা তোমাকে রাখতাম বাহুডোরে।
No comments